ভালোবাসা দিবস ইতিহাস

২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেইটাইন’স নামে একজন খৃষ্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ছিলেন। ধর্ম প্রচার-অভিযোগে তৎকালীন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস তাঁকে বন্দী করেন। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্যে খৃষ্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। বন্দী অবস্থায় তিনি জনৈক কারারক্ষীর দৃষ্টহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এতে সেন্ট ভ্যালেইটাইনের জনপ্রিয়তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই দিন ১৪ই ফেব্রুয়ারি ছিল। অতঃপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেইটাইন’স স্মরণে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন’ দিবস ঘোষণা করেন। খৃষ্টানজগতে পাদ্রী-সাধু সন্তানদের স্মরণ ও কর্মের জন্য এ ধরনের অনেক দিবস রয়েছে। যেমন: ২৩ এপ্রিল – সেন্ট জজ ডে, ১১ নভেম্বর – সেন্ট মার্টিন ডে, ২৪ আগস্ট – সেন্ট বার্থোলোমিজম ডে, ১ নভেম্বর – আল সেইন্টম ডে, ৩০ নভেম্বর – সেন্ট এন্ড্রু ডে, ১৭ মার্চ – সেন্ট প‌যাট্রিক ডে।

পাশ্চাত্যের ক্ষেত্রে জন্মদিনের উৎসব, ধর্মোৎসব সবক্ষেত্রেই ভোগের বিষয়টি মুখ্য। তাই গির্জা অভ্যন্তরেও মদ্যপানে তারা কসুর করে না। খৃস্টীয় এই ভ্যালেন্টাইন দিবসের চেতনা বিনষ্ট হওয়ায় ১৭৭৬ সালে ফ্রান্স সরকার কর্তৃক ভ্যালেইটাইন উৎসব নিষিদ্ধ হয়। ইংল্যান্ডে ক্ষমতাসীন উৎসব পিউরিটানরাও একসময় প্রশাসনিকভাবে এ দিবস উদযাপন করা থেকে বিরত থাকার জন্যে নিষিদ্ধ ঘোষনা করে। এছাড়া অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি ও জার্মানিতে বিভিন্ন সময়ে এ দিবস প্রত্যাখ্যাত হয়।
বাণিজ্যিক
বর্তমানকালে, পাশ্চাত্যে এ উৎসব মহাসমারোহে উদযাপন করা হয়। যুক্তরাজ্যে মোট জনসংখ্যার অর্ধেক প্রায় ১০০ কোটি পাউন্ড ব্যয় করে এই ভালোবাসা দিবসের জন্য কার্ড, ফুল, চকোলেট, অন্যান্য উপহারসামগ্রী ও শুভেচ্ছা কার্ড ক্রয় করতে, এবং আনুমানিক প্রায় ২.৫ কোটি শুভেচ্ছা কার্ড আদান-প্রদান করা হয়
আমাদের দেশের কবি রফিক আজাদ বলেছেনঃ
যদি ভালোবাসা পাই, আবার শুধরে নেবো জীবনের ভুলগুলো।
যদি ভালোবাসা পাই পাহাড় ডিঙাবো আর সমুদ্র সাঁতরাবো”
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
আর Valentine Day সম্পর্কে ইসলাম বলে, “এক নোংরা ও জঘন্য ইতিহাসের স্মৃতিচারণের নাম বিশ্ব ভালবাসা দিবস”। অপবিত্রতা নোংরামি আর শঠতার মাঝে ভালবাসা নামক ভালো বস্তু থাকতে পারে না। তাই আল্লাহ তা‘আলা মানুষের হৃদয় থেকে ভালবাসা উঠিয়ে নিয়েছেন। দিনটি যখন আসে তখন শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো একেবারে বেসামাল হয়ে উঠে। নিজেদের রূপা-সৌন্দর্য উজাড় করে প্রদর্শনের জন্য
রাস্তায় নেমে আসে। যা ইসলাম সমর্থন করেনা।
ভালোবাসা চিরন্তন চলে আসছে অনন্তকাল থেকে চলবে অনাদিকাল পর্যন্ত। মানুষ যখন বিশ্ব ভালবাসা দিবস সম্পর্কে জানত না, তখন পৃথিবীতে ভালবাসার অভাব ছিলনা। আজ পৃথিবীতে ভালবাসার বড় অভাব। তাই দিবস পালন করে ভালবাসার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে হয়! “বিশ্ব ভালবাসা দিবস” বা ”Valentine Day” এর মানে এই নয় যে তা জমা করে ১৪ ই ফেব্রুয়ারী পালন করতে হবে। আমরা মানুষকে ভালোবাসব প্রতিটি ক্ষণে, প্রতিদিন, প্রতিটি কাজে। আমি বলছিনা আমাকে ভালোবাসতেই হবে, তবে আমি চাই কেউ একজনআমার জন্য অপেক্ষা করুক। তাই আসুন ভ্যালেন্টাইন ডে কে বরণ করি একরাশ ভালোবাসা দিয়ে। আর ভালোবাসার জয়গানে মুখরিত করি আমাদের চারিদিক। মানুষকে ভালোবেসে গাই মানবতার জয়গান। তাহলে ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভালোবাসার দিন হিসাবে পবিত্র সম্মানে সমুজ্জ্বল থাকবে। সবাইকে ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *